
আমার জীবনের গল্পে শাহরিয়ার কবির দু‘ভাবে আবির্ভূত হয়েছেন। গল্পের প্রথম ভাগে তিনি নায়ক। ‘ওদের জানিয়ে দাও‘ আর ‘নুলিয়াছড়ির সোনার পাহাড়ে‘র লেখক। রাজনীতি-অর্থনীতির স্বশিক্ষিত পন্ডিত।একসময় আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টি করা গা ছমছমে চরিত্র, সাপ্তাহিক বিচিত্রার জাদরেল নির্বাহী সম্পাদক এবং তুখোর সাংবাদিক। প্রদায়ক নামের এক অদ্ভুত পদাধিকারবলে আমি যখন বিচিত্রায় প্রবেশ করি তখন তিনি আমার দ্বিতীয় আইকনিক চরিত্র। প্রথমটি সম্পাদক শাহাদত চৌধুরী। মুক্তিযোদ্ধা শিল্পী ও দারুন এক সম্পাদক।
সাত বছরে বিচিত্রায় আমি প্রায় ৫০টি কভার স্টোরি করেছিলাম। যার অনেকগুলোর পরিকল্পনা ও সাহস শাহরিয়ার কবিরের দেয়া। সম্পাদনাও তিনিই করেছিলেন। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা আর এই প্লাটফর্মের আয়োজনেই ৯২ সালে গণআদালতে গোলাম আজমের বিচার করা হয়। তার আহ্বানে ও জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে আমি ওই সময়ের বিরূপ রাজনৈতিক পরিবেশে এই দুর্ধর্ষ কাজেও সাহসী হয়েছিলাম। পরবর্তীতে ২০০১-৬ এর চারদলীয় জোট সরকারের আমলে শাহরিয়ার কবিরকে নির্যাতন ও হেনস্থার শিকার হতে হয়েছিল।
গল্পের দ্বিতীয় ভাগে তিনি খলনায়ক। গত ১৫ বছরের আওয়ামী অপশাসনের সময়ে চিরচেনা শাহরিয়ার কবিরকে আমি আর চিনতে পারছিলাম না। উনি ক্রমেই আওয়ামী লীগার হয়ে যাচ্ছিলেন। উনি ক্রমেই তার আদর্শ থেকে সরে যাচ্ছিলেন। এমনকি ১৫ বছরের গুম খুন বিনা বিচারে হত্যা আর জুলাই অগাস্টের গণহত্যা নিয়েও তিনি সোচ্চার হননি। বরং দুঃশাসনকে সমর্থন করেছেন। সবই করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি ও উগ্রবাদী গোষ্ঠী যেন ক্ষমতায় না আসতে পারে সেই বাতাবরণে। আমি তার এ অবস্থান পছন্দ করিনি। তাই আমাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। দেখা হয়নি অনেক বছর।
কিন্তু তাই বলে শাহরিয়ার কবির মানুষ হত্যা করেছেন? তাকে এই অভিযোগে আটক করতে হবে? জেলে নিতে হবে? ডিভিশন না দিয়ে নির্যাতন করতে হবে? বিনা চিকিৎসায় রাখতে হবে? এর কোন কিছুই মেনে নেওয়া যায় না। আমি শাহরিয়ার কবিরের মুক্তি চাই।
চিহ্নিত গণহত্যাকারী, খুনি, ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচারকারীরা ঘুরে বেড়াচ্ছে, পুনর্বাসিত হচ্ছে। তাদেরকে ধরতে হবে। বিচার করতে হবে। বাংলাদেশকে সঠিক পথে নিতে হবে।
*উপরোক্ত লেখাটি সিনিয়র সাংবাদিক আশরাফ কায়সার এর ফেসবক থেকে নেওয়া*
প্রকাশিত লেখাটি লেখকের একান্ত ব্যক্তিগত। সীমান্ত টিভি কর্তৃপক্ষ এর জন্য দায়ী নয়।
মন্তব্য লিখুন
আরও খবর
সাবেক এমপি বাহারের বাড়ি ও জমি সহ ২৯টি...
সাবেক এমপি বাহারের বাড়ি ও জমি...
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি
ইয়াঙ্গুন থেকে টেকনাফে তিন মাস ধরে পণ্য আমদানি...
ইয়াঙ্গুন থেকে টেকনাফে তিন মাস ধরে...
ভারত থেকে যেসব পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলো বাংলাদেশ
ভারত থেকে যেসব পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা...
কুমিল্লায় নিখোঁজের ৯ মাস পর শিশুর মাথার খুলি...
কুমিল্লায় নিখোঁজের ৯ মাস পর শিশুর...
নাইটক্লাবের ছাদ ধসে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ২৩১, মামলা...
নাইটক্লাবের ছাদ ধসে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে...