• মুক্ত কলাম
  • বুয়েট এলামনাই এসোসিয়েশন নিয়ে আমার কিছু ক্ষুদ্র চিন্তা ভাবনা

বুয়েট এলামনাই এসোসিয়েশন নিয়ে আমার কিছু ক্ষুদ্র চিন্তা ভাবনা

৯:২৬ পূর্বাহ্ণ , ১০ এপ্রিল ২০২৫
বুয়েট এলামনাই এসোসিয়েশন নিয়ে আমার কিছু ক্ষুদ্র চিন্তা ভাবনা

বুয়েট ও এর এলামনাই বৃন্দ গ্রহণযোগ্যতার দিক থেকে দেশে সর্বোচ্চ অবস্থানে আছে। অধিকাংশ বুয়েট এলামনাই ভালভাবে প্রতিষ্ঠিত এবং তাদের এই প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পিছনে একদিকে সরাসরি বুয়েটের অবদান আছে এবং অন্যদিকে দেশেরও অবদান আছে কারন আমরা সরকারী টাকায় অনেকটা ফ্রি পড়ালেখা করেছি অতএব সব বুয়েট এলামনাইদের বুয়েট এবং দেশের প্রতি একটা দায়বদ্ধতা আছে। আর এই দায়বদ্ধতার দায়িত্ব পালনের প্লাটফর্ম হতে পারে বুয়েট এলামনাই এসোসিয়েশন। এসোসিয়েশন ডাটাবেজ তৈরি করে আমাদের দক্ষ এলামনাইদেরকে বুয়েটের শিক্ষকদের সাথে যুক্ত করে বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্র তৈরি করতে পারে। আমার প্রস্তাব – এই কয়টি ক্ষেত্র দিয়ে শুরু করা যেতে পারেঃ
বিভিন্ন সরকারী/বেসরকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানের সাথে সংযুক্ত হয়ে তাদের ইনস্পেকশন, টেস্টিং, প্রোডাক্ট রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট, টেকনোলজি আবিষ্কার ইত্যাদি নিয়ে কাজ করা।

সরকারী বিভিন্ন দপ্তর/মন্ত্রনালয়/বিভাগ ইত্যাদিতে বিভিন্ন প্রজেক্টের কনসালটেন্সি, ফিজিবিলিটি স্টাডি, ডিজাইন, সুপারভিশন, নীতিমালা প্রণয়ন ইত্যাদি নিয়ে কাজ করা। সরকারী বিভিন্ন দপ্তর/মন্ত্রনালয়/বিভাগে হাজার হাজার কোটি টাকার কাজ হয় যেখানে ব্যাপক দুর্নীতি ও অপচয় হয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এইসব কাজগুলো বুয়েটের তত্ত্বাবধানে করলে একদিকে দেশের দুর্নীতি ও অপচয় রোধ হবে অন্য দিকে বুয়েটও নানাভাবে উপকৃত হবে।
বুয়েট এলামনাইদের উপরোক্ত সেটাপ যখন হয়ে যাবে তখন বুয়েটের একজন শিক্ষক একদিকে ক্লাস নিবেন, অন্যদিকে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে সুপারভিশন, টেস্টিং ও আরএন্ডডি করবেন, বিভিন্ন প্রজেক্টের কনসালটেন্সি করবে্ন, প্রজেক্ট দেখাশুনা করবেন আবার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে/সরকারী দপ্তরে নিতিমালা প্রনয়নের কাজে অংশগ্রহণ করবেন। এক কথায় তাঁর কাজের পরিধি অনেক গুণ বেড়ে যাবে। বর্তমানে একজন শিক্ষক হয়ত ৯৫% একাডেমিক কাজে ব্যাস্ত থাকেন, তখন একাডেমিক চাপ কমিয়ে ২০% এ নিয়ে আসা হবে। আর বাকী ৮০% সময়ে আরো ১০ ধরনের কাজে উনাদের যুক্ত করা হবে।
এই সব ধরণের কাজ সামাল দেওয়ার জন্য আমাদের ফ্যাসিলিটিও তৈরি হবে যেমন বড় বড় এলামনাই টাওয়ার থাকবে, একেকজন শিক্ষক-এর অধীনে অনেক টিএ/আরএ থাকবে। যেহেতু শিক্ষকদের একাডেমিক চাপ কমিয়ে আনা হবে সেহেতু বর্তমানে ২০০ জন প্রফেসর থাকলে তখন এই সংখ্যা বেড়ে ২০০০ জন হবে অর্থাৎ শিক্ষক নিয়োগ বেড়ে যাবে, ছাত্ররা টিএ/আরএ হিসাবে বিদেশে যাওয়ার পরিবর্তে দেশেই ভাল বেতনে কাজ করবে বরং উল্টো বিদেশ থেকে বাংলাদেশে টিএ/আরএ হিসাবে কাজ করার জন্য আসবে।

ফলাফল দাঁড়াবে, উপরে উল্লেখিত সব কাজ থেকে অনেক বাড়তি আয় আসবে, একজন শিক্ষকের সম্মানী বর্তমানে ১ লাখ টাকা হলে তখন ৫ লাখ টাকা হবে, যেহেতু একাডেমিক কাজের সাথে শিক্ষকদের অন্যান্য কাজের একটা সংযোগ হবে এবং প্রচুর গবেষণা ও উদ্ভাবনমুখী কাজ হবে সেহেতু বুয়েটের আন্তর্জাতিক র‍্যাংকিংও বাড়বে, দেশের সরকারি/বেসরকারি সব ক্ষেত্রে বুয়েট এলামনাইদের অংশগ্রহনের মাধ্যমে দেশের উন্নতি হবে, বুয়েট আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হবে, এলামনাই বৃন্দ তাদের প্রতিষ্ঠান নিয়ে গর্ব করবে, পুনর্মিলনি হবে পুরা ক্যাম্পাস জুড়ে এবং ফ্রি রেজিস্ট্রেশন।
বুয়েট আলামনাই এসোসিয়েশনের ট্রাষ্টি বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য এলামনাইদের এবার যে আগ্রহ তা সত্যিই আশাব্যঞ্জক। আমি আসলে, এ্যাসোসিয়েশন বর্তমানে যে অবস্থায় আছে সেটাকে কিছুটা গতিশীল করার কাজে সহযোগিতার উদ্দ্যেশ্যে ট্রাস্টি বোর্ডের নির্বাচনে অংশগ্রহন করছি। কিন্ত হিসাব করে দেখলাম যে ১৫ জন প্রার্থী হয়েছে তাদের মধ্যে একজন ব্যাতিত সবাই আমার চেয়ে অনেক সিনিয়র এবং সবাই আমার চেয়ে দক্ষ, অভিজ্ঞ ও ভিশনারি তাই আশাকরি ভাল একটা কিছু হবে ইনশা-আল্লাহ এবং নবগঠিত এলামনাই এসোসিয়েশনের ট্রাষ্টি বোর্ড তাদের সুদুর প্রসারি মহাপরিকল্পনার মধ্যে এই বিষয়গুলোও বিবেচনা করবেন। আল্লাহতায়ালা সবার সহায় হউন।

সিরাজুল মাওলা রিপন

প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্ত ব্যক্তিগত। সীমান্ত টিভি কর্তৃপক্ষ এর জন্য দায়ী নয়।

 

মন্তব্য লিখুন

আরও খবর