
সীমান্ত টিভি নিউজ ডেস্ক: দেশের একমাত্র ওটিএ আখ্যা দেওয়া অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি ফ্লাইট এক্সপার্ট। হঠাৎ করে পূর্ব কোন ঘোষণা ছাড়াই বন্ধ করে লাপাত্তা মালিকপক্ষ । প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট ও অ্যাপ সচল থাকলেও ফোন নম্বরেও মিলছে না কোনো সাড়া। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজারো ট্রাভল এজেন্সি সহ সাধারণ গ্রাহকরা। যারার অধিকাংশই আগাম ফ্লাইট, হোটেল ও ওমরা মত গুরুত্বপূর্ণ বুকিংয়ের জন্য টাকা পরিশোধ করেছিলেন।
ভুক্তভোগী ও বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে কয়েকশো কোটি টাকা গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম হিসেবে গ্রহণ করেছে, যেগুলোর কোনো সেবা তারা দিচ্ছে না। অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিযোগ করছেন, তারা টিকিট বুক করলেও শেষ মুহূর্তে জানানো হয়- বুকিং বাতিল হয়েছে, অথচ টাকা ফেরত দেওয়া কোন সম্ভাবনা নেই ।
অভিযোগ উঠেছে, টাকা আত্মসাৎ করে কোম্পানির চেয়ারম্যান রাশিদ শাহ সম্রাট ও তার ছেলে প্রতিষ্ঠানটির সিইও সালমান বিন রাশিদ সায়েম সহ
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে প্রতারণার অভিযোগে একাধিক ব্যক্তি থানায় জিডি ও মামলা করেছেন।
তথ্য বলছে, ফ্লাইট এক্সপার্ট একসময় বাংলাদেশের ডিজিটাল ভ্রমণ খাতের পথিকৃৎ হিসেবে বিবেচিত হতো। দেশ-বিদেশের টিকিট বুকিং, হোটেল রিজার্ভেশনসহ নানা ধরনের ট্যুর প্যাকেজ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময় থেকে তাদের সেবার মান নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন দেখা দেয়।
সংশ্লিষ্টদের মতে, দীর্ঘদিন ধরেই তারা আর্থিক সংকটে ছিল, সেটাই হয়তো এই হঠাৎ ‘গায়েব’ হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। তবে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিবৃতি পাওয়া না গেলেও বিশেষ সূত্রে জানা যায় ২০২১ সালে ইভ্যালি ফ্লাইট এক্সপার্টের মালিকানা কিনে নিয়েছিলেন পরবর্তীতে ইভ্যালি দেওলিয়া হওয়ার পর সালমান চুক্তি বাতিল করে। এরপর তারা নিজেরা আবারোও ফ্লাইট এক্সপার্ট পরিচালনা শুরু করেন । আটাব কমিটি এসব জেনেও চুপ ছিলো কারন হিসেবে কেউ কেউ বলছে ফ্লাইট এক্সপার্ট থেকে বিশেষ সুবিধা ভোগ করতেন তাই তারা নীরবতার ভূমিকা পালন করতেন।
ঢাকার মতিঝিলের সিটি সেন্টারে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, অফিস বন্ধ কিন্তু তার সামনে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের টাকা হারানোর আহাজারি কেউই জানে না অফিস হঠাৎ বন্ধ হওয়ার কারণ। গুঞ্জন আছে- প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার ও সিনিয়র কর্মকর্তারা পরিবার সহ বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন, যাদের বিরুদ্ধে কয়েকশো কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র ও ভুক্তভোগীদের বক্তব্যের ভিত্তিতে ধারণা করা হচ্ছে, এই ঘটনার শিকার হয়েছেন কয়েক হাজার গ্রাহক। মোট ক্ষতির পরিমাণ কয়েকশো কোটি টাকার মতো বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে, প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সালমান বিন রশিদ শাহ সাইমের বাবা কোম্পানিটির চেয়ারম্যান রশিদ শাহ সম্রাট বলেন, তিনি এই ঘটনার সাথে জড়িত নয় তার ছেলে সালমান সহ কয়েকজন বন্ধুবান্ধব মিলে এই প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করতেন এখন তাদের আত্মকেন্দ্রিক সমস্যার জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। তিনি কোথায় আছে জানতে চাইলে প্রতিবেদকের লাইন কেটে দেয় সম্রাট।
উল্লেখ্য, ফ্লাইট এক্সপার্ট’র প্রধান কর্নধার এম এ রশিদ শাহ সম্রাট বর্তমান আটাব কমিটির উপদেষ্টা ও তার ছেলে ফ্লাইট এক্সপার্ট’র সিইও সালমান রশিদ আটবের ওটিএ বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান।
এছাড়াও ফ্লাইট এক্সপার্ট বিদেশী অফলাইন ট্রাভেল এজেন্সীর এপিআই ব্যবহার করে বাংলাদেশ মার্কেটে টিকেট বিক্রয় করতো । এই টাকা বিদেশী ট্রাভেল এজেন্সিগুলোকে হুন্ডির মাধ্যমে পরিশোধ করতো বলেও জানা যায়।
এখন ভুক্তভোগী সদস্যদের প্রশ্ন এত কিছু জানার পরও কেন আটাব কমিটি তাদের এই দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে এতদিন কোন কথা বলেননি ।
মন্তব্য লিখুন
আরও খবর
বাতিল হতে পারে ফ্যাসিস্টের দোসর বর্তমান আটাব কমিটি
বাতিল হতে পারে ফ্যাসিস্টের দোসর বর্তমান...