• জাতীয়
  • অতিরিক্ত যাত্রাবিরতির চাপে রেলওয়ে, ব্যাহত আন্তঃনগর ট্রেনের গতি ও সেবা

অতিরিক্ত যাত্রাবিরতির চাপে রেলওয়ে, ব্যাহত আন্তঃনগর ট্রেনের গতি ও সেবা

৭:০০ পূর্বাহ্ণ , ২৯ মে ২০২৫
অতিরিক্ত যাত্রাবিরতির চাপে রেলওয়ে, ব্যাহত আন্তঃনগর ট্রেনের গতি ও সেবা

সীমান্ত টিভি নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশ রেলওয়ে বর্তমানে অতিরিক্ত ও অপ্রয়োজনীয় যাত্রাবিরতির চাপে কার্যক্রম পরিচালনায় হিমশিম খাচ্ছে। যাত্রীসেবা উন্নয়নের লক্ষ্যে যাত্রাবিরতি কমানোর পরিকল্পনা থাকলেও, রাজনৈতিক ও সামাজিক চাপের মুখে নতুন স্টপেজ চালু করতে বাধ্য হচ্ছে সংস্থাটি।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন সময় সাবেক ও বর্তমান সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এমনকি রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকেও যাত্রাবিরতির সুপারিশ এসেছে। এতে করে রেলের অপারেশন ও বাণিজ্যিক বিভাগ অনিচ্ছা সত্ত্বেও উচ্চপদস্থদের নির্দেশে এসব বাস্তবায়ন করছে।

গত ১৫ বছরে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলেই ২৩টি আন্তঃনগর ট্রেনে নতুন ২৩টি স্টেশনে মোট ৪৬টি যাত্রাবিরতি যুক্ত করা হয়েছে। এতে করে ট্রেনের ভ্রমণ সময় বেড়ে যাওয়ায় নিয়মিত শিডিউল বিপর্যয় ঘটছে।

উদাহরণস্বরূপ, নরসিংদী স্টেশনে বর্তমানে ১৪টি আন্তঃনগরসহ ২৯টি ট্রেনের যাত্রাবিরতি রয়েছে, তবুও এখানেও পারাবত, মহানগর গোধূলি, তূর্ণা ও উপবন এক্সপ্রেসের স্টপেজের দাবি উঠছে।

একইভাবে চট্টগ্রামের নাঙ্গলকোট, নাটোরের মাধনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, গাজীপুরের শ্রীপুর, টাঙ্গাইল ও মির্জাপুর স্টেশনেও নতুন যাত্রাবিরতির দাবি নিয়ে আন্দোলন হয়েছে। নাঙ্গলকোট স্টেশনের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে একাধিক স্টেশন থাকলেও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে সেখানে স্টপেজ সুপারিশ করা হয়েছে।

করোনাকালে বন্ধ হওয়া ৯৩টি কমিউটার, মেইল ও লোকাল ট্রেন এখনো চালু না হওয়ায় স্থানীয় যাত্রীরা আন্তঃনগর ট্রেনেই স্টপেজের দাবি করছেন। অথচ রেলওয়ের ইঞ্জিন, কোচ ও জনবল সংকট বর্তমানে তীব্র আকার ধারণ করেছে।

চাহিদার তুলনায় বর্তমানে মাত্র এক-তৃতীয়াংশ ইঞ্জিন সচল রয়েছে। নতুন যাত্রাবিরতির কারণে ট্রেনের চলাচল সময় বাড়ছে এবং ফিরতি ট্রেনেও দেরি হচ্ছে। প্রতিটি যাত্রাবিরতিতে গড়ে কমপক্ষে দুই মিনিট সময় ব্যয় হয়, যা ট্রেনপ্রতি ১০ মিনিট পর্যন্ত দেরি তৈরি করতে পারে।

রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, “ঢাকা ও আশপাশের স্টেশনগুলোর যাত্রা কল্যাণ সমিতি প্রায় প্রতিটি আন্তঃনগর ট্রেনে যাত্রাবিরতির দাবি তুলছে। এতে ট্রেনের মান কমছে, শিডিউল বিপর্যয় বাড়ছে এবং যাত্রী দুর্ভোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, অপ্রয়োজনীয় যাত্রাবিরতি পর্যালোচনার পরিকল্পনা থাকলেও বাস্তবে উল্টো চাপ আরও বেড়েছে। এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে রেলের সার্বিক যাত্রীসেবা ও আয় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।