• উপ সম্পাদকীয়
  • অর্থনৈতিকভাবে পরাধীন সাংবাদিক, মিডিয়া মালিক, সাংবাদিকতাকে স্বাধীন করবে কিভাবে?

অর্থনৈতিকভাবে পরাধীন সাংবাদিক, মিডিয়া মালিক, সাংবাদিকতাকে স্বাধীন করবে কিভাবে?

৯:২২ অপরাহ্ণ , ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশ অর্থনীতিতে দুর্বল রাষ্ট্র। জনগণের বেশিরভাগ আর্থিক সংকটে দিন কাটায়। সাংবাদিকরা সেই জনগণের  অংশ। দুর্বল অর্থনীতি নির্ভরশীলতা বাড়ায়, মিডিয়া সহ দেশের অন্যান্য জনবান্ধব প্রতিষ্ঠানকে। বেশিরভাগ মিডিয়া হাউজ গুটি কয়েক বিত্তবানদের অর্থায়নে চলে। আবার ঐ মিডিয়ার প্রভাব খাটিয়ে আরো বিত্তবান, ক্ষমতাবান হতে চান ঐ  বিনিয়োগকারীরা বিত্তবানরা।

অন্যদিকে সংবাদকর্মীরা আর্থিক সংকট দূর করতে, বিত্তবানদের ক্রীতদাসে পরিণত হয়। স্বাধীন সাংবাদিকতা দূরে থাক, প্রতিযোগিতায় ব্যাপক সময় ও মেধা  অপচয় করেন মেধাবী সাংবাদিকরা পদোন্নতি আর চাকুরী টিকিয়ে রাখতে। এই পরাধীনতার চক্র থেকে বের হবেন কিভাবে? অথবা এই নম: নম: স্বাধীন সাংবাদিকতা বা সাংবাদিকদের যেন তেন ভাবে টাকা কামানোর অপচেষ্টা থেকেই বা মুক্তির উপায় কি?

অন্যদিকে স্বাধীন সাংবাদিকতায় একদিকে মালিক শত্রু, নীতিহীন ব্যবসায়ীদের পক্ষে থাকলে বন্ধু, অপরাধ জগতের মানুষের হুমকি, রাজনীতিবিদদের মামলা হয়রানি, নিজের নিরাপত্তা, পরিবারের সদস্যদের নির্ভয় জীবন যাপন নিশ্চিত  করা চ্যালেঞ্জ শুধু নয়, মহাসংকট।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কেন এতটা স্বাধীন? কেনই বা জবাবদিহিতা এতটা কম; যেখানে সংবাদ আর অপরাধ একাকার হয়ে গেছে। গুজব আর বৃত্তিহীন তথ্য যাচাই-বাছাই শেষ হতে না হতেই; যা সর্বনাশ হবার তা হয়ে যায়। মানহানির প্রতিকার টুকুও পাওয়া যায় না। মিথ্যুক প্রতারক অনলাইন পপুলার নারী-পুরুষ  রাজত্ব করে বেড়াঁচ্ছে। রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ও রাজনীতিক দলিয় নেতা কর্মীরাও এর সুযোগ নিচ্ছে। যা তথ্য সন্ত্রাসের আওতায় পরে। ইউটিউবার, ফেইসবুক রাইটার, ব্লগার, এক্স কিংবা টিকটককে অসামাজিক কনটেন্ট তথ্যের অবাধ স্বাধীনতার নামে চর্চিত হচ্ছে; নিয়ম-নীতির বালাই ছাড়াই। অশ্লীল ও অশ্রাব্য ভাষা, বাচনভঙ্গি, মানসিক রোগীর (অপলাপ) বিকৃত উপস্থাপনা নিকৃষ্টভাবে পছন্দনীয় হচ্ছে। লাইক বাহ-বাহ মন্তব্যে ভক্তবৃন্দের ব্যাপক উপস্থিতি যে কাউকে বিভ্রান্ত করছে প্রতিনিয়ত। যা আবার বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতাকে কঠিন করে তুলছে।

অনলাইন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত বহুল জনপ্রিয় তথ্য, উপাত্ত, ছবি, ভিডিও, শব্দ; ক্রমেই বিভ্রান্তি, উস্কানি, অস্থিরতা ও সামাজিক অস্থিতিশীলতার নিয়ামক। এর জন্য সংস্কার কমিশনকে চ্যালেঞ্জে পড়তে হবে। মিডিয়া জগতের এসব সমস্যার সমাধান কল্পে তথ্য কমিশন বা নবগঠিত গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনকে চমৎকারিত্ব দেখাতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে রাজনৈতিক দলের লেজুড়ভিত্তি মুক্ত সাংবাদিকতা। অবদান রাখতে হবে সময়োপযোগী সৃষ্টিশীল জাতীয় নীতিমালা ও এর কার্যকর প্রয়োগের সামর্থে।