• সারাদেশ
  • জেলা প্রশাসক প্রত্যাহারের দাবিতে আখাউড়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানববন্ধন

জেলা প্রশাসক প্রত্যাহারের দাবিতে আখাউড়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানববন্ধন

১:৩৫ অপরাহ্ণ , ২৮ আগস্ট ২০২৫
জেলা প্রশাসক প্রত্যাহারের দাবিতে আখাউড়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানববন্ধন

মোঃ দেলোয়ার হোসেন, আখাউড়া ( ব্রাহ্মণবাড়িয়া) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মহাশ্মশানের জায়গা দখল, জেলা প্রশাসকের প্রত্যাহারের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে।সকল মন্দিরে উড়ছে কালো পতাকা, পূজারীদের গায়ে পড়েছেন কালো পোশাক, লাল নিশান টিনের বেড়া না সরানো হলে, বন্ধ থাকবে দুর্গাপূজা!গতকাল বুধবার সকাল ৭ ঘটিকার সময় শান্তিবন মহাশ্মশানে ট্রাক দিয়ে বালু ফেলে পুনরায় আবারও জায়গা দখলের অভিযোগ উঠেছে সাততলা ভবনের মালিক, নাসির মিয়া, মুছা মিয়া, বাছির মিয়ার বিরুদ্ধে।শ্মশানের জায়গা দখল কান্ডের প্রতিবাদে, সমস্ত আখাউড়ার হিন্দু সনাতনীরা আজ সকাল ১১ ঘটিকার সময় আখাউড়া পৌর মুক্তমঞ্চে জেলা প্রশাসক ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে প্রত্যাহারের দাবিতে হিন্দু সোনাতনীরা এক বিশাল বড় মানববন্ধন পালন করেন, ওই মানববন্ধনে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ খ্রিস্টান সকল জাতি দল-মত নির্বিশেষে এই প্রতিবাদ মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।

ওই মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, শ্রী হীরা লাল সাহা, সভাপতি,শান্তিবন মহাশ্মশান। শ্রী চন্দন কুমার ঘোষ, সভাপতি রাধামাধব আখড়া। মোঃ মমতাজ মিয়া সাবেক কাউন্সিলর। শ্রী অলক কুমার চক্রবর্তী সাধারণ সম্পাদক রাধামাধব আখড়া। শ্রী আশীষ ব্রহ্মচারী প্রধান অধ্যক্ষ। শান্তিবন মহাশ্মশান,। প্রমুক। সকলের বক্তব্যে বলা হয়যে, জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শ্মশানের ভূমিতে লাল নিশান ও টিনের বেড়া লাগানো হয়েছে, ৭ দিনের মধ্যে শান্তিবন মহাশ্মশানের দেবত্ব সম্পত্তি ভূমি থেকে লাল নিশান ও টিনের বেড়া না সরালে, পরবর্তীতে কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে, এদিকে আখাউড়ার প্রতিটি মন্দিরে উড়ছে কালো পতাকা, মন্দিরের পূজারীদের গায়ে পড়ছেন কালো পোশাক । মানববন্ধনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় সমস্ত দুর্গাপূজা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের কার্যকর্তা ব্যক্তিগণ।

উল্লেখ যে,গত ২০ আগস্ট আখাউড়া কেন্দ্রীয় শান্তিবন মহাশ্মশানে জায়গা লাল নিশান বসিয়ে দখল করার অপচেষ্টার প্রতিবাদে, আজ আখাউড়ায় সনাতনীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ পালিত হয়, অন্যদিকে প্রত্যেকটি মন্দিরে উড়ছে কালো পতাকা।

গত ২১ আগষ্ট আখাউড়া রাধা মাধব আখড়াতে সকল হিন্দুদের এক বিশাল প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়েছিল, ওই সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সম্মতিক্রমে, সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যতদিন পর্যন্ত মন্দিরের জায়গা থেকে সরকারি দেওয়া লাল নিশান সরানো না হবে, ততদিন পর্যন্ত সকল মন্দিরে কালো পতাকা উড়বে।

শান্তিবন মহাশ্মশানের প্রধান পূজারী আশীষ ব্রহ্মচারী জানান, ২৭৫, ২৭৬, ২৭৭ এ তিন দাগের জায়গা হিন্দু সনাতনীদের দেবত্ব সম্পত্তি,, ২৭৫ দাগে ৯২শতক, ২৭৬ দাগে ৯৬ শতক, ২৭৭ দাগে ২০শতক, এ তিন দাগের জায়গার উপর মামলা চলমান, এবং সাততলা ভবনটি, ২৭৫ ও ২৭৬ দাগে দেবত্ব সম্পত্তির উপরে জোরপূর্বক করা হয়েছে।

সেবাশ্রম ও মহাশ্মশাণের পুজারি আশীষ ব্রহ্মচারি আরো জানান, ২৭৫ ও ২৭৬ এ দুই দাগ দেবত্য সম্পত্তি, এই সাততলা ভবনটি ২৭৫ ও ২৭৬ দাগের জায়গাতে, তৎকালীন শ্মশান কমিটির বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক এঊ সাততালা ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে।

আনিসুর রহমান ও তার ভাইদের সঙ্গে শ্মশানের জমিসংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। ২০১৪ সালের একটি রিটপিটিশনের কথা বলে প্রশাসনের পক্ষে এখানে মাপজোঁক করা হয়। বিএস ম্যাপ অনুযায়ি শ্মশাণের কিছু জায়গা খাস খতিয়ানের বলে উল্লেখ করা হয়। তবে সিএস আর আর,ও,আর অনুযায়ী ম্যাপে শ্মশাণের জায়গা বলে সুস্পষ্টভাবে প্রমানিত। এ নিয়েও মামলা চলমান। রিটপিটিশনে শ্মশাণকে পক্ষ না করেই কৌশলে মিথ্যা তথ্য দিয়ে জায়গা পরিমাপের আদেশ আনানো হয়। যদিও এ আদেশ ওই সময়ই বাতিল হয়ে যায়। নতুন করে প্রশাসন কিভাবে আদেশ পেলো সেটি জানা নেই। প্রশাসনের এক কর্তা ব্যক্তি সরাসরি আনিসুর রহমানসহ প্রভাবশালীদের পক্ষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি জায়গাটি তাদের দখলে দিতে অধনস্থদেরকে চাপ দিয়ে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে তারা আইনগতভাবে লড়বেন। কিন্তু ইতিমধ্যেই প্রতিপক্ষ ঘর তোলার প্রস্তুতি নেওয়ায় আতঙ্কের মধ্যে আছেন, আখাউড়া হিন্দু সনাতনীরা।

বাংলাদেশ সরকারের কাছে জোরালো দাবি জানিয়েছেন,হিন্দুদের এই দেবত্ব সম্পত্তি উদ্ধার করে ফিরিয়ে দেওয়া হোক। হিন্দুদের সকল দেবত্ব সম্পত্তি সরকারের আওতাধীনে থাকে, সরকারি লোকজন মোটা অংকের টাকা ঘুষ বাণিজ্য করে কিভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের এই মন্দিরের জায়গা পাবলিকের নামে বিএস করে দেন। যে দেশে হিন্দুদের মন্দিরের জায়গা, সরকার নিজেও দখল করে, এবং অন্যকে দখল বুঝিয়ে দেন। এসময় বিশ্বজিৎ পাল বাবু বলেন,সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে হিন্দু, মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনের উপস্থিত রয়েছেন।

মন্তব্য লিখুন

আরও খবর