• আন্তর্জাতিক
  • দিল্লিতে বিরোধী বিক্ষোভে রাহুল-প্রিয়াঙ্কা গ্রেফতার

দিল্লিতে বিরোধী বিক্ষোভে রাহুল-প্রিয়াঙ্কা গ্রেফতার

৯:১১ পূর্বাহ্ণ , ১১ আগস্ট ২০২৫
দিল্লিতে বিরোধী বিক্ষোভে রাহুল-প্রিয়াঙ্কা গ্রেফতার

সীমান্ত টিভি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের রাজধানী দিল্লিতে বিজেপি ও নির্বাচন কমিশনের আঁতাতের অভিযোগে বিক্ষোভ চলাকালে বিরোধীদলীয় নেতা ও কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী এবং তার বোন, লোকসভার সদস্য প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্রাকে পুলিশ আটক করেছে।

সোমবার (১১ আগস্ট) সকালে এই ঘটনা ঘটে। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, এসময় শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে গোষ্ঠী) নেতা সঞ্জয় রাউতসহ বিরোধী দলের আরও কয়েকজন এমপিকেও আটক করা হয়।

সংসদ ভবনের বাইরে থেকে মধ্য দিল্লির রাস্তায় ছড়িয়ে পড়া বিরোধী নেতাদের বিক্ষোভে প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান, পুলিশের ব্যারিকেডে ধাক্কা এবং তা টপকানোর চেষ্টা দেখা যায়। এক পর্যায়ে তৃণমূল কংগ্রেসের এমপি মিতালি বাগ হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়লে রাহুল গান্ধী তাকে সহায়তা করেন।

কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ‘ইন্ডিয়া’ জোটের পরিকল্পনা ছিল সোমবার সকালে নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে মিছিল করার। কিন্তু এর আগেই পুলিশ সংসদ ভবনের চারপাশে ব্যারিকেড বসিয়ে রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেয় এবং বিপুলসংখ্যক নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করে। ফলে বিক্ষোভকারীরা ঘেরাও অবস্থায় পড়ে এবং দুপুর ২টা পর্যন্ত সংসদের উভয় কক্ষ মুলতবি ঘোষণা করা হয়।

বিরোধীরা অভিযোগ করে, বিজেপি নির্বাচন কমিশনের সহায়তায় ভোটার তালিকা জালিয়াতি ও প্রভাবিত করে নির্বাচনে কারচুপির চেষ্টা করছে। এই অভিযোগ প্রথম উঠে গত বছরের মহারাষ্ট্র নির্বাচনের পর, যেখানে কংগ্রেস, শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে) ও এনসিপি (শরদ পওয়ার) কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটার তালিকা বদলে বিজেপির জয় নিশ্চিত করার অভিযোগ আনে। তাদের দাবি, মহারাষ্ট্রে কেন্দ্রীয় নির্বাচনের মাত্র ছয় মাসের মধ্যে অস্বাভাবিক হারে নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছে। পরে কর্নাটকের লোকসভা নির্বাচন নিয়েও একই অভিযোগ ওঠে।

গত সপ্তাহে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের বৈঠকে রাহুল গান্ধী তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করে বলেন, দেশে ব্যাপক ভোটার জালিয়াতি হচ্ছে। তিনি নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানান, ভোটার তালিকার খসড়া অনলাইনে সার্চযোগ্য আকারে প্রকাশ করার, যাতে ভুলত্রুটি সহজে যাচাই করা যায়।

এছাড়া বিহারের ভোটার তালিকা নিয়ে কমিশনের ঘোষিত ‘বিশেষ নিবিড় সংশোধনী’ প্রক্রিয়াও বিরোধীদের ক্ষোভ বাড়িয়েছে। নির্বাচন সামনে রেখে ঘোষিত এই প্রক্রিয়া সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করা হয়। আবেদনকারীরা অভিযোগ করেন, এটি বেআইনি এবং কমিশনের এখতিয়ারের বাইরে। এছাড়া সময়সীমা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়, কারণ এতে বাদ পড়া ভোটারদের আপিল করার যথেষ্ট সময় নাও থাকতে পারে। বিরোধীদের দাবি, বিজেপি ভোট ব্যাংক কমানোর উদ্দেশ্যে এই প্রক্রিয়া চালু করেছে।

ভোটার যাচাইয়ের ক্ষেত্রে আধার বা নির্বাচন কমিশনের পরিচয়পত্র গ্রহণ না করার বিষয়েও প্রশ্ন ওঠে। যদিও ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এই সংশোধনী প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে অনুমতি দিয়েছে, শর্ত দিয়েছে— যাতে প্রকৃত ভোটার বাদ না পড়েন এবং ইতোমধ্যে বাদ যাওয়া প্রায় ৬৫ লাখ ভোটারকে আপিলের সুযোগ দেওয়া হয়।

অভিযোগের জবাবে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, তাদের প্রক্রিয়া স্বচ্ছ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতের জন্যই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তারা রাহুল গান্ধীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, তিনি যেন স্বাক্ষরিত হলফনামার মাধ্যমে এসব অভিযোগের প্রমাণ উপস্থাপন করেন।

মন্তব্য লিখুন

আরও খবর