• জাতীয়
  • বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের নতুন কূটনৈতিক সম্পর্কে দুশ্চিন্তায় ভারত

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের নতুন কূটনৈতিক সম্পর্কে দুশ্চিন্তায় ভারত

৬:১৫ পূর্বাহ্ণ , ২৮ আগস্ট ২০২৫
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের নতুন কূটনৈতিক সম্পর্কে দুশ্চিন্তায় ভারত

সীমান্ত টিভি নিউজ ডেস্ক: শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন গতি এসেছে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সহযোগিতা ও সরাসরি ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ এই ঘনিষ্ঠতার প্রতিফলন হিসেবে দেখা হচ্ছে। ভারতের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া এক সম্পাদকীয়তে এ পরিস্থিতিকে নয়াদিল্লির জন্য উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেছে।

গতকাল বুধবার প্রকাশিত সম্পাদকীয় “Watch Closely: Editorial on the shift in bilateral relations between Pakistan and Bangladesh”–এ বলা হয়, নয়াদিল্লিকে দ্রুত ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির পথ খুঁজে বের করতে হবে। সম্পাদকীয়তে সতর্ক করা হয়েছে যে, যদি ভারত বাস্তববাদী রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি না নেয়, তবে ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় পাকিস্তান বাংলাদেশে নিজের প্রভাব ক্রমেই বিস্তৃত করতে সক্ষম হবে।

সম্পাদকীয়তে উল্লেখ করা হয়, শেখ হাসিনা গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ভারতে আশ্রয় নেন। তাঁর দলের বহু নেতা বর্তমানে সেখানেই অবস্থান করছেন বলে ধারণা করা হয়। এ প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ঢাকায় এসে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন। এটি ছিল হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ঢাকা–ইসলামাবাদ সম্পর্কের নাটকীয় অগ্রগতি।

দুই পক্ষ বাণিজ্য, কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার ও সরাসরি ফ্লাইট চালুর বিষয়ে আলোচনা করেছে। কিন্তু ভারতের উদ্বেগ আরও গভীর হয়েছে ইসহাক দারের রাজনৈতিক বৈঠকগুলিকে ঘিরে। তিনি বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও সেই ছাত্রনেতাদের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন, যারা শেখ হাসিনার পতনের আন্দোলনের অগ্রভাগে ছিলেন। বাংলাদেশে ২০২৬ সালের শুরুতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা, আর তার আগে পাকিস্তান প্রকাশ্যে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক শক্তিগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছে যা নয়াদিল্লির জন্য স্পষ্ট উদ্বেগের কারণ।

দ্য টেলিগ্রাফ বলছে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় সমালোচনার জায়গা ছিল তাঁর ভারতের প্রতি অতিরিক্ত ঘনিষ্ঠতা। সেই অভিযোগকেই কাজে লাগিয়ে জনরোষ ধীরে ধীরে ভারতবিরোধী মনোভাবে রূপ নেয়। ফলে এখন পাকিস্তানের সঙ্গে সখ্য দেখানো রাজনৈতিক শক্তিগুলোর ভবিষ্যৎ প্রভাব ভারতের জন্য সতর্ক সংকেত বহন করছে।

সম্পাদকীয়তে আরও বলা হয়, জামায়াতে ইসলামী এখনও ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাদের গণহত্যা ও নারীদের ওপর সংঘটিত গণধর্ষণের দায় থেকে নিজেদের আলাদা করেনি। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় পাকিস্তানের প্রভাব বাড়তে থাকলে তা ভারতের জন্য আরও জটিল পরিস্থিতি তৈরি করবে।

শেষাংশে বলা হয়, বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক শক্তিগুলোর সঙ্গে নয়াদিল্লিকেও যোগাযোগ বাড়াতে হবে। অতীতের অবিশ্বাস থাকা সত্ত্বেও বাস্তববাদী কূটনীতি দাবি করে যে, ভারতকে দ্রুত ঢাকার সঙ্গে কাজের ক্ষেত্র খুঁজে বের করতে হবে। সময়ের দাবি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করকে এ বিষয়ে সক্রিয় হতে হবে।

মন্তব্য লিখুন

আরও খবর