
(সীমান্ত টিভি নিউজ ডেস্ক) বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক হৃদয়ের স্পন্দনের মতো। ঐতিহাসিক, ভৌগোলিক, ঐতিহ্যগত এবং সমমনা কৃষ্টির ওপর প্রতিষ্ঠিত। এছাড়াও অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক, ব্যবসায়িক, নানাদিক দিয়ে সম্পর্কে আবদ্ধ এই দু-দেশ। ফলে, খুব সহজে এই সম্পর্কের গতি থেমে যাওয়ার কথা নয় ।
সাহিত্য সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যগত অনেক দিক দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারত একই বিন্দুতে গাথাও বলা যেতে পারে। ধর্মীয় আস্বাদন, পারিবারিক সম্পর্ক এই তারকাটা নামক বেড়ার মাঝে গেথে আছে দুটি দেশের মধ্যে। স্বাধীন বাংলা গড়ার পেছনে ভারতের অবদান রয়েছে বলে, ইতিহাসের পাতা ও দুটি দেশের কৃষ্টিগত সম্পর্কে তার আভাস পাওয়া যায়।
গত বছরের ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা পতনের পর থেকে দেশ দুটির মধ্যে যে বৈরিতা সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের একরোখা *আধিপত্যবাদ ভেঙে পড়া এর মূল কারণ হতে পারে।
ভারতীয় মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে “বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ও দেশের জনগণকে যেভাবে কটাক্ষ করে হেয় প্রতিপূর্ণ করছে, তা অত্যন্ত দুঃখের বিষয়।” দুই দেশের নাগরিকদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উত্তেজনাপূর্ণ কথাবার্তা আদান-প্রদানকে উপেক্ষা করা গেলেও সরকারিভাবে ভারত ও বাংলাদেশ তাদের নীতি ও পদক্ষেপে স্পষ্টতই দুটি দেশ— দেশবিরোধী অবস্থানের দিকে এগোচ্ছে।
৫ আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক নানাবিধ টানাপোড়েনের মধ্যে পড়ে গেছে । সীমান্ত থেকে শুরু করে ভিসা নিষেধাজ্ঞার মতো বিষয়গুলোতেও জটিল বাণী ব্যবহার করছে দুই দেশ। বর্তমানে এই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে দু-দেশের সাধারণ জনগণের মধ্যে। ফলে ধর্ম কেন্দ্রিক যে দাঙ্গা তা ভীষণ নজরে আসছে । ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি সমর্থকরা মনে করেন আওয়ামী সরকার অর্থাৎ শেখ হাসিনাকে আবারো ক্ষমতায় বসালে বাংলাদেশের শান্তি ফিরে আসবে। তারমানে স্পষ্ট বুঝা যায় তারা পরিবার তন্ত্র রাজনীতি পছন্দ করে। আওয়ামী সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের মানুষ ভারতের উগ্রতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে দেখা যায় ।
এদিকে উত্তেজনা সত্ত্বেও ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি মাতৃত্ব সম্পর্ক রয়েছে, যা পারস্পরিক সদিচ্ছা এবং কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে। দুই দেশ পুনর্গঠন করতে পারে এবং একটি স্থিতিশীল ও সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে পারে। সম্পর্ক উন্নতির জন্য যা করা উচিত তা হলো— ভারতকে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান প্রদর্শন, রাজনৈতিক হস্থক্ষেপ বন্ধ, অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, পানি সমস্যার সমাধান, বাণিজ্য বৈষম্য দূর, সীমান্ত হত্যা বন্ধ , বন্ধুত্বসুলভ হাত, চিকিৎসা ও নানাবিধ বিষয় নজরে এনে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা করতে হবে।
এসব মেলবন্ধনের ধারেকাছেও না ঘেঁষে দু-দেশ উগ্রপন্থা অবলম্বন করছে, ভারতীয় মিডিয়াগুলো প্রধান খাদ্য এখন বাংলাদেশ নিয়ে তাদের গুজবের কমতি নেই রিপাবলিক বাংলা সহ বাংলা হান্ট থেকে নেওয়া একটি লাইন— “বৈরিতা প্রদর্শন করলে…., বাংলাদেশকে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন ভারতীয় সেনাপ্রধান!” এরকম চটকদার হেডলাইনে তাদের সংবাদ মাধ্যমগুলো ব্যস্ত সময় পার করছে।
অন্যদিকে সীমান্তে বিএসএফের কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এর জের ধরে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছিল ঢাকা। জবাবে বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনারকে ডেকে পাঠিয়েছিল দিল্লি।
এসব নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জসওয়াল বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নিয়ে বলেন, “আমরা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে আমাদের অবস্থান একাধিকবার স্পষ্ট করেছি। আমাদের পররাষ্ট্র সচিব ঢাকা সফরে গিয়েছিলেন। তিনি জানিয়ে এসেছেন, আমরা ইতিবাচক সম্পর্ক চাই। বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে এমন সম্পর্ক চাই যা দুই দেশের জনগণের জন্য কল্যাণকর হবে। এটি হলো ইতিবাচক অবস্থান এবং আমাদের এ চাওয়া অব্যাহত আছে। এখন সময়ই বলে দিবে তাদের এইসব কথার সাথে বাস্তবে কতটা মিল পাওয়া যায় ।
মন্তব্য লিখুন
আরও খবর
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত, সামরিক অভিযান বন্ধ
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত, সামরিক অভিযান বন্ধ
এবার ভারতের ১৫ শহরে পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন...
এবার ভারতের ১৫ শহরে পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র...
ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পাকিস্তানে নিহত বেড়ে ২৬
ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পাকিস্তানে নিহত বেড়ে...
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কি বন্ধ হবে?
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কি বন্ধ হবে?
পাকিস্তানের বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা করল ভারত
পাকিস্তানের বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা...
ভারতীয় যুদ্ধবিমানের ড্রপ ট্যাংক পড়ে শিবপুরীতে বাড়ি ধ্বংস
ভারতীয় যুদ্ধবিমানের ড্রপ ট্যাংক পড়ে শিবপুরীতে...