সীমান্ত টিভি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: এক হাজার ১৫৯ দিন ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। দীর্ঘ এই সংঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে ইউক্রেন, কিন্তু এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বিশ্বে। বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপ ও এশিয়ায়।
এ প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি যুদ্ধ বন্ধে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে, যার কেন্দ্রে রয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
গত শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন একটি চুক্তি সই করার খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।’ এই মন্তব্যটি আসে মস্কোয় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা পর।
পরদিন শনিবার পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যানুষ্ঠানে অংশ নিতে রোম সফরে গিয়ে ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন। ভ্যাটিকানের বিশাল গির্জার ভেতরে মাত্র ১৫ মিনিটের এই বৈঠককেই যুদ্ধের অচলাবস্থা দূর করার প্রয়াস হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বৈঠক শেষে টেলিগ্রামে দেওয়া এক বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, ‘ভালো বৈঠক হয়েছে। আলোচনায় সম্পূর্ণ ও নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি এবং স্থায়ী শান্তির বিষয়টি উঠে এসেছে।’ তিনি যুদ্ধের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে একটি নির্ভরযোগ্য সমাধানের ওপর গুরুত্ব দেন।
এদিকে রোম ছাড়ার আগে সাংবাদিকদের ট্রাম্প জানান, ‘আমরা যখন যুদ্ধ বন্ধের দ্বারপ্রান্তে, তখনও পুতিন ইউক্রেনের বেসামরিক এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছেন। এটা একেবারেই অপ্রয়োজনীয়।’
তিনি পুতিনকে সরাসরি যুদ্ধ বন্ধে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান এবং দ্বিতীয় দফা নিষেধাজ্ঞার সম্ভাবনার কথাও বলেন।
এদিকে শনিবার রাশিয়ার নিরাপত্তা সংস্থা এফএসবি জানায়, মস্কোর বাইরে গাড়িবোমা বিস্ফোরণে সিনিয়র জেনারেল ইয়ারোস্লাভ মোসকালিক নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় তারা একজন সন্দেহভাজনকে আটক করেছে, যার নাম ‘কুজিন’। তবে কিয়েভ এই বিস্ফোরণ নিয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনে ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ ভূখণ্ড এখনো মস্কোর দখলে রয়েছে। এর আগে ট্রাম্প যুদ্ধ থামানোর শর্ত হিসেবে ইউক্রেনের কিছু খনিজসম্পদ দাবি করেছিলেন। এবারের আলোচনায় তিনি সেই দাবি পুনরায় তুলেছেন কি না, তা জানা যায়নি।
যদিও ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যও যুদ্ধ থামানোর পক্ষে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে, কিন্তু মূল প্রশ্ন থেকে যায়—পুতিন কি সত্যিই যুদ্ধ বন্ধে রাজি? দখলকৃত অঞ্চলগুলো কি রাশিয়া ছাড়বে?
বর্তমান পরিস্থিতি দেখে অনেকেরই মনে হচ্ছে, যুদ্ধ থামানোর নামে হয়তো আন্তর্জাতিক রাজনীতির অদৃশ্য ভাগ-বাটোয়ারা চলছে। ট্রাম্পের ঘোষণাকে অনেকে তাই ‘ফাঁকা বুলি’ হিসেবেও দেখছেন।
অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর: মাহাথীর খান ফারুকী, অনলাইন এডিটর: শাহীন আলম জয়
নিউইয়র্ক অফিস: ৩৯৪৭,৬৩ স্ট্রিট, ফ্লোর-০১, উডসাইট, এনওয়াই-১১৩৭৭, নিউইয়র্ক সিটি, ইউএসএ। ফোন: +১(৩৪৭)৭৪১৪৬২৯
নিউজ ই-মেইল:- simantonewstv@gmail.com
©️২০২৫ সর্বস্বত্ব ®️ সংরক্ষিত। সীমান্ত টিভি