সাংবাদিক মিশুর শখের বাগান — ‘সাহেবনগর জে. আলী ভিলেজ’

সীমান্ত টিভি প্রতিবেদক: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া – আগরতলা সড়ক ধরে এগিয়ে গেলেই ‘সাহেবনগর জে.আলী ভিলেজ’। খুবই সাদামাটা সবুজ শ্যামল মায়ায় ভরা ওই বাড়িটির কাছে এলে যেকারোই চোখ আটকে যাবে। যেন একটা শান্তির নিবাস- ‘সাহেবনগর জে. আলী ভিলেজ’। এ ভিলেজের বাসিন্দা মহিউদ্দিন মিশু। বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল সীমান্তের একজন সাহসী ও নির্ভীক সাংবাদিক হিসাবে দেশের গন্ডি পেরিয়েও বেশ খ্যাতি ছড়িয়ে রয়েছে মহিউদ্দিন মিশুর। তিনি দেশের জনপ্রিয় যমুনা টেলিভিশন ও পাঠকপ্রিয়তার শীর্ষে দৈনিক যুগান্তরের সাংবাদিক এবং আখাউড়া উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি পাশাপাশি তিনি আখাউড়া প্রিন্ট ও টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হিসাবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

মহিউদ্দিন মিশু পেশায় একজন সংবাদ কর্মী হলেও জে. আলী ভিলেজে তার পৈতৃক বসতবাড়ির পতিত জমিতে তিল তিল করে গড়ে তুলেছেন শখের বাগান। তার জে. আলী ভিলেজে শোভা পাচ্ছে বেশ কিছু ফুল ও ফলের গাছ। বাগানের আয়তন খুব বড় না হলেও দেশী বিদেশী গাছ-গাছালিতে শখের এই ‘রূপকথা বাঙলোবাড়ির’ বাগানে যেকারো মন ছুঁয়ে যাবে। সিনিয়র সাংবাদিক মিশু বলেন, তথ্য প্রযুক্তির এ যুগে অত্যন্ত উদ্বেগজনক পরিস্থিতির মধ্যে আমাদের দিনাতিপাত। আমরা যদি একটি অসুস্থ বিকৃত বিবেকহীন প্রজন্ম গড়তে না চাই। তাহলে কর্মব্যস্ত এ জীবনে একটু স্বস্তির নিশ্বাস নিতে একটুকরো সবুজ আর শ্যামলে ভরা এমন বাগান যাদের আছে তারা সত্যিই ভাগ্যবান।

মহিউদ্দিন মিশু জানান, গাছের প্রতি ভালোবাসা ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বেশি বেশি গাছ লাগাতে মানুষকে উৎসাহিত করতেই তার এ ক্ষুদ্র চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। সবুজ শ্যামল কে ভালোবাসলে দেশ সবুজ হবে, ছায়া দিবে, ফল দিবে, ফুল দিবে প্রাণীকূল অক্সিজেন পাবে। স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়ে সুস্থভাবে মানুষ বাঁচতে পারবে। সাংবাদিক বলেন, সকালে পাখির কলকাকলি আর কিচিরমিচির শব্দ। ফুলেফুলে প্রজাপ্রতির চঞ্চলতা আমাকে বিমোহিত করে তোলে। তিনি বলেন, বাগানের ফল মানুষ যেমন ভোগ করবে তেমনি কীটপতঙ্গ আর পাখিরাও মনের মাধুরী মিশিয়ে খাবে।

মিশুর মতে, গাছ লাগিয়ে গাছের পরিচর্যা করলে অলস সময় যেমন কেটে যাবে। তেমনি অসৎ কুবুদ্ধি মাথায় কিংবা মনে আসবে না। কর্মব্যস্ততায় সময় পার হবে। মিশুর শখের বাগানে আম্রপালি, হিমসাগর, চিয়াংমাই, আমেরিকান রেড পালমার, বেনানাম্যাংগো, বারি-৪ জাতের আম গাছ রয়েছে। বাগানটিতে লিচু, পেঁপে, বরই, পেয়ারা, থাই তেতুল, আতা, সফেদা, আমড়া, কলা, করমজা, লটকন আর ভিয়েতনামি কাঁঠাল আর কুইন জাতের আনারসের পাশাপাশি মসলা জাতীয় গাছ এলাচ, তেজপাতা ছাড়াও বেগুন, টমেটো, করলা, চিচিঙ্গা, ঢেঁড়স, কাঁচা মরিচ, পুঁইশাক, কলমি শাক, মিষ্টি কুমড়া, সজনে, লেবুসহ হরেক রকমের ফুল, ফল ও সবজির মনোমুগ্ধকর সমারোহ সাহেবনগর জে. আলী ভিলেজে বাগানজুড়ে শোভা পাচ্ছে গোলাপ, বেলি, গন্ধরাজ, কচমচ, কামিনী, অপরাজিতা, গাঁদা, নয়নতারা বাদেও দেশি-বিদেশি হরেক ফুল গাছ।
অবশ্য বৃক্ষপ্রেমীদের কাছে সাহেবনগর জে. আলী ভিলেজ এখন অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।

সাংবাদিক মিশু বলেন, ‘কর্মব্যস্ত এ জীবদ্দশায় একটু স্নিগ্ধতা পেতে বাড়ির সবুজের মাঝে কৃষির নির্যাস পেতেই তার এই পরিকল্পনা।’ তিনি জানান, খুব ছোট্টবেলা থেকে গাছ ও প্রকৃতি আর পাখিদের প্রতি ভালোবাসা থেকেই এ বাগানের জন্ম। ফুল – ফল গাছগুলো প্রকৃতির সৌন্দর্য ধরে রেখেছে, যা সবাইকে মুগ্ধ করে। এখান থেকে ফরমালিনমুক্ত ফল ও সবজি পাওয়া যায়। নিজেদের চাহিদা পূরণ করে প্রতিবেশী ও স্বজনদের দেয়া হয়। বাগান টিকিয়ে রাখতে প্রতিনিয়তই চলে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা আর পরিচর্যার কাজ- যেন সবুজই প্রাণের স্পন্দন। অপরূপ সবুজ শ্যামল মায়া ভরা “সাহেব জে. আলী ভিলেজের রূপকথা বাঙলোবাড়ি’র বাগান প্রকৃতির সৌন্দর্য দিনশেষে মনে প্রশান্তি এনে দেয়।

সাংবাদিক মিশু মনে করেন, মানুষের চিন্তাচেতনা সঠিক থাকলে, সুন্দর মন থাকলে সবকিছুকে সুন্দরভাবে সাজানো সম্ভব। সাংবাদিক মহিউদ্দিন মিশু তার পেশাগত কাজে যেমন চৌকস ও মেধার স্বাক্ষর রেখে চলছেন পাশাপাশি প্রকৃতি লালনের মাধ্যমে তার মৌনিক এবং পারিপার্শ্বিক দিকটাও সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। প্রকৃতি প্রেমী মিশু এখন পূর্বাঞ্চলের একটি মডেল বলে মনে করছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাসহ সচেতনমহল।