• জাতীয়
  • কমেছে ইলিশ, বেড়েছে দাম নদীতে জালে ধরা পড়ছে হতাশা

কমেছে ইলিশ, বেড়েছে দাম নদীতে জালে ধরা পড়ছে হতাশা

৬:৪৯ পূর্বাহ্ণ , ২২ জুন ২০২৫
কমেছে ইলিশ, বেড়েছে দাম নদীতে জালে ধরা পড়ছে হতাশা

সীমান্ত টিভি নিউজ ডেস্ক: বরগুনার দক্ষিণ ডালভাঙ্গা গ্রামের নারী জেলে লাইলীর জালে একদিনে ধরা পড়েছে মাত্র একটি ইলিশ ও দুটো জাটকা। শেষ সময়ে জালে আটকে ছিল কয়েকটি ছোট পোয়া মাছ। সব মিলিয়ে বিক্রি করে আয় হয়েছে এক হাজার টাকা, অথচ খরচ হয়েছে ৬০০ টাকা। হাতে থেকেছে মাত্র ৪০০ টাকা।

তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগরের মোহনায় যেতে পারিনি দুর্যোগের কারণে। বিষখালীর ভেতরে মাছ আসছে না ডুবোচরের জন্য। তাই মাছ মিলছে কম।

এই চিত্র শুধু বিষখালীর নয়। দেশের প্রায় সব বড় নদীতেই চলছে ইলিশ সংকট। দুই মাস নিষেধাজ্ঞা শেষে গত ১ মে থেকে মেঘনা, ইলিশা ও কালাবদর নদীতে মাছ ধরতে নামলেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাচ্ছেন না জেলেরা। ফলে আড়তে সরবরাহ কম, আর বাজারে দাম চড়া।

বরিশালের মৎস্য ব্যবসায়ী জহির শিকদার জানান, “শুক্রবার ১ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ৫০০ টাকায়। ১ কেজির ইলিশ ২ হাজার ৮০০ টাকায়। সাগরের মাছ কিছুটা সস্তা হলেও নদীর ইলিশের দাম অনেক বেশি। চাঁদপুর, ভোলা, বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ আড়তগুলোতে চলতি বছরের সর্বোচ্চ দাম উঠেছে। রাজধানীতেও মোকামের দামের চেয়ে প্রতি কেজিতে ১০০–১৫০ টাকা বেশি দামে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে।

এই সংকট মোকাবিলায় চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক সম্প্রতি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে ইলিশের মূল্য নির্ধারণের অনুরোধ জানিয়েছেন। মৎস্য উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, “ইলিশের দাম দুই হাজার টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়। বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, নদীর গভীরতা কমে যাওয়া, ডুবোচর সৃষ্টি, জলবায়ু পরিবর্তন, গবেষণার ঘাটতি এবং সামাজিক সুরক্ষার অভাব ইলিশ উৎপাদন হ্রাসের মূল কারণ। প্রতি বছর প্রায় ৩৮ কোটি জাটকা ধরা পড়ে। এগুলোকে বাড়তে দিলে দেশের ইলিশ উৎপাদন কয়েকগুণ বাড়তে পারে।

এদিকে নদীর নিরাপত্তা সংকটে ইলিশ এখন ডিম পাড়ার জন্য হাতিয়া ও সন্দ্বীপমুখী হচ্ছে। পদ্মা-মেঘনার ওপরের অংশ হয়ে পড়েছে অনিরাপদ। গভীর সমুদ্রে ভারতীয় আধুনিক ট্রলারের আধিপত্যকেও দায়ী করছেন জেলেরা, যেটা বাংলাদেশের জলসীমায় ইলিশের পরিমাণ কমিয়ে দিচ্ছে।

মন্তব্য লিখুন

আরও খবর