বিদেশে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখিয়ে শত শত শিক্ষার্থীর টাকা আত্মসাৎ, সিআইডি’র জালে এম. কে বাসার আটক!

শাহীন আলম জয়: বিদেশে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখিয়ে শত শত শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎকারী খায়রুল বাশার ওরফে (এম কে বাশার) কে মানি লন্ডারিং মামলায় গ্রেফতার করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ১৪ জুলাই ২০২৫ দুপুরে সিআইডি’র ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে একটি টিম রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেন।

পরে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, খায়রুল বাশার দীর্ঘদিন ধরে তার স্ত্রী খন্দকার সেলিমা রওশন ও ছেলে আরশ ইবনে বাশারকে সঙ্গে নিয়ে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারণা চক্র গড়ে তোলেন। যা ‘বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ এই আশ্বাসের আড়ালে, ২০১৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত শত শত শিক্ষার্থীর কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় এই পারিবারিক চক্রটি।

যা মূলত চটকদার বিজ্ঞাপন, ভুয়া ভিসা প্রসেসিং, বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুয়া প্রতিনিধিত্বের নাম ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সরাসরি অফিসে এবং বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে টাকা আদায় করে। তদন্তে সূত্রের জানা যায়, প্রতারিত অনেক শিক্ষার্থীর নামে কোনো আবেদনই বিদেশি প্রতিষ্ঠানে করা হয়নি, আবার অনেকেই বিদেশে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়ে চরম বিপদের পড়েছেন।

মামলার প্রাথমিক তদন্তকালে এখন পর্যন্ত ৪৪৮ জন ভুক্তভোগীর কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ এর তথ্য পাওয়া গিয়েছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে ধারণা করছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী । ভুক্তভোগীদের অনেকেই এনআই অ্যাক্টসহ প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। সিআইডির অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, অভিযুক্তরা গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায়কৃত অর্থ নিজেদের নামে ও অন্যদের নামে পরিচালিত বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে উত্তোলন করে তা দিয়ে স্থাবর সম্পদ ক্রয়, ব্যবসা পরিচালনা, এবং অবৈধভাবে অর্থ স্থানান্তর ও রূপান্তর করেন। ভুক্তভোগীদের মধ্যে অনেকেই প্রতারণার শিকার হয়ে গুলশান (ডিএমপি) থানাসহ সারাদেশে একাধিক মামলা রুজু করেছে।

উল্লেখ্য, এম কে বাশারের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিয়ান স্কুল এন্ড কলেজের হোস্টেলে অস্বাস্থ্যকর খাবার দাবার ও শিক্ষার্থীদের শারীরিক নির্যাতন সহ হত্যা মত অনেক অভিযোগ রয়েছে। তা তৎকালীন সময়ে একুশে টেলিভিশন সহ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমের প্রচার হলে বাসারের মালিকানাধীন পরীক্ষামূলক টিভি চ্যানেল সিটিভি দিয়ে হুমকি ধামকি দিতেন। এসমস্ত অভিযোগের কারণে পরে অবশ্য চ্যানেলটি আর আলোর মুখ দেখিনি। বাসার নামে তার এলাকাতে রয়েছে বিশাল অট্টালিকা শত শত একর জমি যা নামমাত্র টাকা দিয়ে কেনার অভিযোগ রয়েছে। দুদকের সন্ধানে বেরিয়ে আসবে প্রকৃত সত্য এমন প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।