• সারাদেশ
  • নুরাল পাগলার দরবারে হামলা ও লাশ পোড়ানোর ঘটনায় ইমামসহ ১৮ জন আটক

নুরাল পাগলার দরবারে হামলা ও লাশ পোড়ানোর ঘটনায় ইমামসহ ১৮ জন আটক

৬:৩১ পূর্বাহ্ণ , ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নুরাল পাগলার দরবারে হামলা ও লাশ পোড়ানোর ঘটনায় ইমামসহ ১৮ জন আটক

সীমান্ত টিভি নিউজ ডেস্ক: রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলার দরবারে হামলা, ভাঙচুর, সংঘর্ষ এবং কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করে পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এক ইমামসহ ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে।

গ্রেফতারদের মধ্যে স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম ‘লতিফ হুজুর’ রয়েছেন, যিনি ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিলেন। তাকে মানিকগঞ্জের একটি চর এলাকা থেকে ধরা হয়।

মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এ ঘটনায় নিহতের বাবা মো. আজাদ মোল্লা বাদী হয়ে সোমবার রাতে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মামলা করেন। মামলায় হামলা, মারধর, হত্যাকাণ্ড, দরবার ও মাজার ভাঙচুর, সম্পদ লুটপাট, কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন ও তা পুড়িয়ে ফেলার অভিযোগ আনা হয়েছে।

গত ৫ সেপ্টেম্বর রাতে গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভয়াবহ সহিংসতার ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় একটি গোষ্ঠী দরবারটিকে ‘শরিয়তবিরোধী’ আখ্যা দিয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে। হামলার সময় দরবারে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও ভক্তদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে একজন নিহত হন এবং দুই পক্ষের শতাধিক মানুষ আহত হন।

পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নেয় যখন দরবারের প্রতিষ্ঠাতা নুরাল পাগলার মরদেহ কবর থেকে তুলে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক দেখা দেয়।

বর্তমানে পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, বসানো হয়েছে চেকপোস্ট, চলছে টহল।

পুলিশ জানিয়েছে, হামলার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্তের কাজ চলছে এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন, এতে উগ্র ধর্মীয় গোষ্ঠীর সম্পৃক্ততা থাকতে পারে।

স্থানীয়রা জানায়, দরবার ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে ধর্মীয় মতবিরোধ চলছিল। অনেকে ভক্তদের আচার-অনুষ্ঠানকে ‘ধর্মের অপব্যাখ্যা’ হিসেবে দেখছিলেন। এই মতবিরোধ থেকেই সহিংসতার সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা।

অন্যদিকে দরবার সংশ্লিষ্টদের দাবি, এটি পরিকল্পিত হামলা—ধর্মের নামে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে একটি আধ্যাত্মিক কর্মকাণ্ড ধ্বংসের অপচেষ্টা।

প্রশাসন ইতোমধ্যে এলাকাবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। গুজব ও উসকানিমূলক বক্তব্য থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে এবং সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে—আইন নিজের হাতে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

মন্তব্য লিখুন

আরও খবর